বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৩ ১৪৩০   ১৮ রমজান ১৪৪৫

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
সর্বশেষ:
২৬ দিনের ছুটি পাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মেট্রোরেলের মতিঝিল-কমলাপুর অংশে ভায়াডাক্ট স্থাপন শুরু চীনের পর বাংলাদেশের বড় বাণিজ্যিক অংশীদার আসিয়ান দেশে কমেছে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের সংখ্যা ৫০ হাজার মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন
৩৭৪

৪৮ ঘন্টায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছেন কুষ্টিয়াবাসীরা

নিউজ ডেস্ক:

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

কোন ঝামেলা ছাড়াই মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পাসপোর্ট করার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছেন কুষ্টিয়াবাসীরা।

ঢাকায় বেসরকারি একটি ফার্মে চাকুরি করেন আরিফুল হক সিদ্দিকী। বাসা শহরের পিটিআই রোডে। গত সপ্তাহে পাসপোর্ট করার জন্য কুষ্টিয়া আসেন। কোন ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্ট করার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিয়ে কিছুটা চিন্তায় ছিলেন তিনি। তবে কোন প্রকার যোগাযোগ ও অর্থ ছাড়া মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি পুলিশের কাছ থেকে সেবা পেয়েছেন। এমন সেবা পেয়ে ভীষণ খুশি তিনি।

আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের বিষয়ে জনমনে এখনো নানা বিরুপ ধারণা রয়েছে। আমারও ছিল। তবে এবার সেই ভুল দূর হয়েছে। আমাদের দেশের পুলিশও দ্রুত সেবা দিতে পারে তার নজির আমি নিজেই।’

মুজিববর্ষে কুষ্টিয়া পুলিশ জনসাধারণকে দ্রুত সেবা দিতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। যার একটি দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে সব ধরণের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বা ছাড়পত্র দেয়া। জানুয়ারি মাস থেকে এ সেবা শুরু করেছে জেলার ডিএসবি শাখা। বিশেষ করে পাসপোর্ট, চাকুরি সংক্রান্ত তদন্ত ও কেউ যদি দেশের বাইরে যেতে চায়, সেইসব তদন্ত দ্রুত ও কম সময়ের মধ্যে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়।

ডিএসবির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন, ‘মুজিববর্ষে জনতার পুলিশ হতে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। সত্যিকার অর্থে পুলিশী সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিটি সদস্য। আমরাও সেবা প্রত্যাশীদের সাথে আলাপ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সেবা দিতে চেষ্টা করছি। বিশেষ করে পাসপোর্টের তদন্ত নিয়ে আগে নানা অনিয়মের কথা শোনা যেত। এখন সেই অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে প্রতিটি ইউনিটকে। ৪৮ ঘণ্টায় যদি কোনভাবেই না পারা যায় ৭২ ঘণ্টা পার করা যাবে না। ৭২ ঘণ্টা পার করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এদিকে পুলিশের এমন উদ্যোগে সাধারন মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। মেয়ের জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে আসা শহরের মজমপুরের বাসিন্দা মিঠু বলেন, ‘পুলিশের কাছে সহজেই কোন কাজে আসা হয় না। মেয়ের জন্য কাজে এসেছিলাম। পুলিশ সদস্যরা অভ্যর্থনা জানিয়ে বসিয়ে রেখে নিজেরাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ করে দিয়েছে। পুলিশের এমন মনোভাব আগে ছিল না। দিনদিন পরিবর্তন আসছে।’

শুধু এখানেই নয়, প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বৃদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ডেস্ক করা হয়েছে। সেখানে একজন নারী কর্মকর্তা কাজ করছেন। এছাড়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিতে প্রতিটি থানায় তিনটি করে চেয়ার সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, থানায় কেউ মামলা ও জিডি দিয়ে ফেরার পর পুলিশের একজন কর্মকর্তা সেবা প্রত্যাশীদের সাথে গোপনে যোগাযোগ করছে।  সেবা পেতে হয়রানী হয়েছে কি-না, অর্থ লেগেছে কি-না তা জানা হচ্ছে। যদি কোন অনিয়ম পাওয়া যাচ্ছে সাথে সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ কারণে ভয়ে কোন পুলিশ সদস্য অনিয়ম করার সাহস পাচ্ছে না। এমন উদ্যোগের বিষয়টি প্রশংসা কুড়িয়েছে।

আগে বিশেষ করে পাসপোর্টের তদন্তে সময় লাগতো এক সপ্তাহ থেকে কোন কোন ক্ষেত্রে ১৫দিন। তাও প্রতিটি তদন্তের জন্য নেয়া হতো ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। আবার অর্থ না পেলে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করার মত বহু অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া যারা দেশের বাইরে যেতে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নেয়ার জন্য আসতো তাদের কাছ থেকেও নেয়া হতো মোটা অঙ্কের অর্থ। তবে পুলিশ সুপারের উদ্যোগে এখন বদলে গেছে গোটা সিস্টেম। অর্থ, সময় ও হয়রানী থেকে রেহায় পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। 

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘পুলিশ নিয়ে জনমনে নানা ভীতি ও বিরূপ মনোভাব রয়েছে। অনেকেই থানায় আসতে চান না। তাই সেটা দূর করার জন্য প্রতিটি সেবা সহজীকরণ করা হয়েছে। কোন সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানী করা যাবে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাসপোর্টের তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জিডি, এজাহার দিতে আসা সাধারণ মানুষকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ যে জনতার সেটা প্রমাণ করার সময়ে এসেছে। আমরা সেরাটা দিতে চাই।

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
 কুষ্টিয়ার  বার্তা
এই বিভাগের আরো খবর