শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
১০৩

মুক্তবাণিজ্যে আগ্রহী সিঙ্গাপুর

প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২২  

বাংলাদেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে সিঙ্গাপুর। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসছেন। এ সফরে দুই দেশের বাণিজ্য বাড়াতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের ঘোষণা আসতে পারে। এ ছাড়া মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)-এর বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তিও স্বাক্ষর হতে পারে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, ১৫ নভেম্বর সিঙ্গাপুরের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। পরবর্তী দুই দিন, ১৬ ও ১৭ নভেম্বর ওই প্রতিনিধি দল সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে। দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর মধ্যেও বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে এফটিএ করার বিষয়ে আলোচনা শুরুর জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। 

সচিব বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে এফটিএ করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষর হলে আসিয়ানের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ ধরনের বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে সুযোগ সৃষ্টি হবে। 

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০২০-২১ অর্থবছরে সিঙ্গাপুরে ১১৬ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর থেকে আমদানি করেছে ২ হাজার ৪৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরে রপ্তানি বাড়াতে চায়। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাংলাদেশ পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত পণ্য, ওষুধ, হালকা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের কৃষি খাত, ফুড প্রসেসিং, আইটি, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আগ্রহ রয়েছে। 

এ ছাড়া বাংলাদেশ হালাল ফুড উৎপাদনে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যৌথভাবে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে কাজ করছে। বিশ্ববাজারে হালাল ফুডের একটি বড় বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রায় ২ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের হালাল পণ্যের বাজার সৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশ হালাল ফুড উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের প্রযুক্তি ও সহযোগিতা নিতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ হালাল ফুড উৎপাদনে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে কাজ করতে পারে। মিউচুয়াল রিকগনিশন, সার্টিফিকেশন এবং গুণগত মান নিশ্চিত করে মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হালাল পণ্যের চাহিদা মিটানো সম্ভব। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, সিঙ্গাপুর এবং বাংলাদেশের মধ্যে নৌ ও আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। পটুয়াখালীতে আধুনিক পায়রা সমুদ্র বন্দর হয়েছে, মোংলা বন্দরকে আধুনিক করা হয়েছে, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে, মাতারবাড়ীতে নির্মাণ হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। এর ফলে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর মধ্য দিয়ে এই বাণিজ্য আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
 কুষ্টিয়ার  বার্তা
এই বিভাগের আরো খবর