শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
২১৫

ফোক ফেস্ট : শ্রোতাদের আজ ‘পাগল’ করবেন যারা

বিনোদন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯  

নাচের তালে শুরু হয় ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট ২০১৯’র আসর। এরপর শুধুই ভেসে বেড়াচ্ছে শেকড়সন্ধানী গানের সুর। প্রথম দিনে বাংলাদেশ, ভারত ও জর্জিয়ার লোকগানে জমে উঠে উৎসব। সেই সহজিয়া বাণী ও সুরে সুরে উঠে আসে জীবনের গভীর দর্শন থেকে আধ্যাত্মিকতা, প্রেম আর মাটির ঘ্রাণ।

দেশ-বিদেশের মৃত্তিকাসংলগ্ন সেই মায়াবি সুরের টানে অগনিত শ্রোতাদের উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে উৎসব আঙিনা। এভাবেই সূচনার দিনে ঝলমলে হয়ে উঠে উৎসবস্থল।

বিশ্ব দরবারে বাংলা লোকসঙ্গীতের সুরসুধা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট। শনিবার পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শ্রোতারা উপভোগ করবেন এ উৎসব। 

পঞ্চমবারের মতো সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এ লোকসংগীতের উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার। আজও সুরের অমীয় সুধায় বুঁদ হবেন আগত শ্রোতারা। 

এদিন শোনা যাবে দেশের শিল্পী মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, ম্যাজিক বাউলিয়ানার কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলামের গান। এছাড়া শ্রোতারা শুনতে পাবেন পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ এবং মালির হাবিব কইটে এ্যান্ড বামাদার গান।

নিচে আজকের শিল্পীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো: 

মালেক কাওয়াল: বাংলা লোকসঙ্গীতের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব তিনি। চার দশকের বেশি সময় ধরে কাওয়ালী গান গেয়ে আসছেন তিনি। মালেক কাওয়ালের গানে হাতেখড়ি শুরু মহীন কাওয়ালের কাছে। পরবর্তীতে তিনি ওস্তাদ মরহুম টুনু কাওয়ালের কাছে তালিম নিয়েছেন। কাওয়ালী গানের পাশাপাশি তিনি মাইজভান্ডারি গানেও পারদর্শী। 

ফকির শাহাবুদ্দিন: বাংলাদেশের লোকসঙ্গীত, বাউল ও সুফি গানের জনপ্রিয় শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন। পাশাপাশি তিনি একজন গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত গবেষক। লোকগানের কিংবদন্তী শাহ আবদুল করিমের সান্নিধ্যে আসার পর বাউল গানের দিকে ঝুঁকে পড়েন ফকির শাহাবুদ্দিন। তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাউল সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িত তিনি। এ পর্যন্ত ৭টি একক অ্যালবাম এবং বেশ কয়েকটি যৌথ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে তার। ফকির শাহাবুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বাউল গান নিয়ে গবেষণা করছেন, গ্রামে গ্রামে ঘুরে সংগ্রহ করেছেন প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার বাউল গান। 

কামরুজ্জামান রাব্বি: বর্তমান সময়ের বাংলা লোকগানের একটি জনপ্রিয় নাম কামরুজ্জামান রাব্বি। দোতারা বাজিয়ে লোকগান গেয়ে এই শিল্পী খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। চাচা আবদুল জলিলের কাছ থেকে দোতারা বাজানো শেখেন রাব্বি। গান শেখেন রাজশাহীতে, ওস্তাদ নিজামুল ইসলাম খানের কাছে। ২০১৬ সালে বাউল গানের রিয়ালিটি শো ‘বাউলিয়ানা’র মঞ্চে সর্বপ্রথম নজর কাড়েন রাব্বি। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের একজন তালিকাভুক্ত শিল্পী।

শফিকুল ইসলাম: মাটির গান গেয়ে কৈশোরেই শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নিয়েছে শফিকুল ইসলাম। ২০১৬ সালে আয়োজিত ‘বাউলিয়ানা’য় প্রথম রানারআপ হয়ে আলোচনায় আসে শফিকুল। এরপর চলতি বছরে আয়োজিত গানের রিয়্যালিটি শো ‘গানের রাজা’য় অংশ নিয়েও নতুন করে আলোচনায় আসেন। মূলত বাউল ও বিচ্ছেদি গান করলেও সব ধরনের গানেই পারদর্শিতা রয়েছে এই ক্ষুদে শিল্পীর। ময়মনসিংহের ছেলে শফিকুল এখন গান গাইছে দেশের বড় বড় সব মঞ্চে।

হিনা নাসরুল্লাহ (পাকিস্তান): সুরেলা কণ্ঠের জন্য সুপরিচিত হিনা নাসরুল্লাহ। পাকিস্তানের এ শিল্পী মূলত সুফী ঘরানার গান করেন। খুব ছোটবেলায় পাকিস্তানি টেলিভিশনে হামদ ও না’ত পরিবেশনার মাধ্যমে তার সঙ্গীত জীবনের শুরু। বিশ্বের নানা প্রান্তে সুফী কনসার্টে সুরের মূর্ছনায় শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। তিনি উর্দুর পাশাপাশি সিন্ধি এবং সারাইকি ভাষায়ও গান করে থাকেন।

হাবিব কইটে (মালি): মালিয়ান লোকসঙ্গীতের জীবন্ত কিংবদন্তী হাবিব কইটে। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তার প্রথম অ্যালবাম ‘মুসো কো’ দিয়ে সারাবিশ্বে সঙ্গীতপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ভিন্নধর্মী গিটারবাদন এবং গায়কী দিয়ে শ্রোতাদের মাতিয়ে রেখেছেন। 

১৯৯৪ সাল থেকে তিনি নিজের ব্যান্ড বামাদাকে নিয়ে প্রায় ১৭শ কনসার্টে গান করেছেন, পারফর্ম করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় মঞ্চে। 

এবারের লোকসঙ্গীত উৎসবের সমাপনী দিনে শ্রোতা-দর্শকদের সুরের মোহনায় ভাসাবেন বাংলাদেশের কাজল দেওয়ান, চন্দনা মজুমদার, পাকিস্তানের জুনুন এবং রাশিয়ার সাত্তুমা।

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
 কুষ্টিয়ার  বার্তা
এই বিভাগের আরো খবর