শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০   ১৯ রমজান ১৪৪৫

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
৬৪

প্রস্রাবের পর টিস্যু ব্যবহারের গুরুত্ব

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৩  

প্রস্রাব-পায়খানা মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। কেউ এর থেকে মুক্ত থাকতে পারে না। প্রস্রাব-পায়খানার পর পবিত্রতা অর্জন করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। এ থেকে পবিত্র না হলে মৌলিক ইবাদত করা সম্ভব হয় না। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা পাক-পবিত্র লোকদের পছন্দ করেন।’ (সূরা তাওবা, আয়াত, ১০৮)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২২৩)

বিশেষ করে প্রস্রাব-পায়খানা  থেকে পবিত্রতার বিষয়ে হাদীস শরীফে অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে গড়িমসি করা ব্যক্তিদের নোংরা ও অসামাজিক বলে গণ্য করা হয়। প্রস্রাব শেষে হাদিসে ঢিলা (টিস্যু) ও পানি  ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের জন্য পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিয়ে থাকি। তোমরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে কেবলাকে সামনে বা পেছনে দিয়ে বসবে না। ডান হাত দিয়ে শৌচকার্য সম্পাদন করবে না।’ তিনি তিনটি ঢিলা ব্যবহারের নির্দেশ দিতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা করা থেকে বারণ করতেন। -(আবু দাউদ, হাদিস : ০৭)

হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কবরের অধিকাংশ আজাব হবে পেশাবের কারণে। তাই পেশাব থেকে বেঁচে থাক। -(মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমায়দ, হাদীস. ৬৪২; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ৬৫৪)

আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পেশাব থেকে বেঁচে থাক। কারণ কবরে বান্দাকে সর্বপ্রথম পেশাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ -(মুজামে কাবীর, তবারানী ৮/১৫৭)

আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আব্দুর রহমান বিন ইয়াযীদ রহ. বলেন, সালমান ফারসী রা.-কে বলা হল, তোমাদের নবী তোমাদের সবকিছু শিক্ষা দিয়েছেন; এমনকি শৌচাগার ব্যবহারের পদ্ধতিও! সালমান রা. বললেন, ‘হাঁ, অবশ্যই! তিনি আমাদেরকে নিষেধ করেছেন, আমরা যেন ডান হাত দ্বারা ইস্তিঞ্জা না করি, ইস্তিঞ্জার সময় তিন পাথরের কম ব্যবহার না করি এবং গোবর বা হাড্ডি দ্বারা ইস্তিঞ্জা না করি।’ -(সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬২, জামে তিরমিযী, হাদীস ১৬; সুনানে আবু দাঊদ, হাদীস ৭; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৭১৯)

অতএব প্রস্রাব-পায়খানার পর পবিত্রতা অর্জনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যুগের পরিবর্তনের কারণে মানুষের দৈহিক অবস্থা ও ব্যবহার্য জিনিসপত্রের পরিবর্তন হয়। তাই ঢিলা না থাকলে এর পরিবর্তে টিস্যুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে।

আলী রা. মুহাজির সাহাবীদের অন্যতম। তিনি মুহাজিরদের তুলনায় তাবেয়ীদের দৈহিক অবস্থার দুর্বলতা দেখে তাবেয়ীদের লক্ষ করে বললেন, তোমাদের পূর্বের লোকেরা পশুর মত (শক্ত) মল ত্যাগ করত। আর তোমরা পাখির মত (নরম) মল ত্যাগ কর। তাই তোমরা ঢিলা ব্যবহারের পর পানি দ্বারা ইস্তিঞ্জা কর। -(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, হাদীস ১৬৩৪)

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
 কুষ্টিয়ার  বার্তা
এই বিভাগের আরো খবর