বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৩ ১৪৩০  

মাশরুম খাওয়ার উপকারিতা

কুষ্টিয়ার বার্তা

প্রকাশিত : ০১:২০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

প্রকৃতি আমাদের গাছপালা আকারে অনেক ধরনের খাদ্য উপাদান দিয়েছে। মাশরুম তার মধ্যে একটি। বর্তমান সময়ে, মাশরুমের চাষ ব্যাপকভাবে করা হয় এবং মাশরুমের অনেক ধরনের প্রজাতি রয়েছে। মাশরুম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়।

পুষ্টিবিদদের মতে, মাশরুমে সেলেনিয়াম ও ইরগোথিওনিন রয়েছে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে বি ভিটামিন, কপার ও অন্যান্য পুষ্টিও আছে। খাবারটি কেবল শারীরিক নয়, মানসিক উপকারও করতে পারে। এখানে মাশরুম খাওয়ার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

রক্তচাপ হ্রাস করে
মাশরুম হলো পটাশিয়ামের দারুন একটি উৎস। পটাশিয়াম রক্তনালির সংকোচন কমিয়ে রক্তচাপ হ্রাস করে। কেউ উচ্চ রক্তচাপে ভুগলে দ্রুত জেনে যাবেন এমনটা নয়, উপসর্গ প্রকাশ পেতেই বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে। তাই রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত মাশরুম খেতে পারেন। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

রোগদমন শক্তি বৃদ্ধি করে
গবেষণায় দেখা গেছে, মাশরুমের প্রদাহবিরোধী প্রতিক্রিয়ায় ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। নিয়মিত মাশরুম খেলে বিভিন্ন রোগ সংক্রমণের প্রবণতা কমে আসে।

ওজন কমায়
একাধিক গবেষণায় শরীরচর্চা ও জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন আনার পাশাপাশি খাবার তালিকায় মাশরুম রেখে শরীরের ওজন কমানোর সুফল পাওয়া গেছে। মাশরুমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাকীয় সমস্যার ঝুঁকি কমাতে পারে। মায়ো ক্লিনিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপাকীয় সমস্যা ওজন বৃদ্ধি করতে পারে।

তারুণ্য দীর্ঘায়িত করে
মাশরুমের দুইটি উচ্চ ঘনত্বের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো- ইরগোথিওনিন এবং গ্লুটাথিওন। ২০১৭ সালে প্রকাশিত পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণায় বলা হয়েছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দুটি একত্রে থাকলে শরীরকে শারীরবৃত্তীয় চাপ থেকে সুরক্ষা দিতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করে। উল্লেখ্য, শারীরবৃত্তীয় চাপে শরীরে অকালেই বয়স্কতার ছাপ পড়ে যেতে পারে, যেমন- বলিরেখা।

মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়
২০২১ সালে প্রকাশিত স্পেনের একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণায় জানা গেছে, পলিফেনল সমৃদ্ধ কিছু খাবার (মাশরুম, কফি ও কোকোয়া) পারকিনসনস ও অ্যালঝেইমারস রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। এছাড়া মাশরুম স্মৃতিশক্তি ঠিক রাখতে পারে। গবেষকরা ভবিষ্যতে স্নায়ুতান্ত্রিক রোগের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি বাটন মাশরুম খেতে পরামর্শ দিয়েছেন।

মেজাজ প্রফুল্ল রাখে
পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা মেজাজের ওপর মাশরুমের প্রভাব নিয়েও গবেষণা করেছেন। নিয়মিত মাশরুম খেয়েছেন এমন ২৫ হাজার লোকের নমুনায় বিষণ্নতার হার কম ছিল। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাশরুমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইরগোথিওনিন অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে বিষণ্নতার উপসর্গ প্রতিরোধ করে। গবেষকরা বাটন মাশরুম খেতে সুপারিশ করেছেন, যেখানে বিদ্যমান পটাশিয়াম উদ্বেগও হ্রাস করতে পারে।

হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে
তরকারিতে মাশরুম ব্যবহারে বেশ সুস্বাদু হয়ে ওঠে, কারণ এতে গ্লুটামেট রিবোনিউক্লেওটাইড রয়েছে। আমরা জানি, অতিরিক্ত লবণ খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই খাবারে লবণের ব্যবহার কমিয়ে মাশরুম ব্যবহার করলে হৃদপিণ্ডের সুস্থতা কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে। এক বাটি মাশরুমে মাত্র ৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। মাশরুমকে লাল মাংসের ভালো বিকল্প বিবেচনা করতে পারেন। ডায়েট থেকে লাল মাংস কমানোর মানে হলো- ক্যালোরি, কোলেস্টেরল ও ফ্যাটও কমিয়ে ফেলছেন। এর ফলে হৃদপিণ্ডের সুস্থতা বজায় থাকে।

শরীরকে সতেজ করে
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে বি ভিটামিন রিবোফ্লাভিন, ফোলেট, থিয়ামিন, প্যান্টোনিক অ্যাসিড ও নিয়াচিন রয়েছে। এসব পুষ্টি শরীরকে খাবার থেকে শক্তি ব্যবহারে সাহায্য করে এবং সারা শরীরে অক্সিজেন বহনকারী লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করে। ফলত শরীর সতেজ হয়ে ওঠে।