শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০  

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস আজ

ডেস্ক রিপোর্ট:

কুষ্টিয়ার বার্তা

প্রকাশিত : ১২:৪০ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২১ শনিবার

আজ ১৭ এপ্রিল, বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস। ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ‌‌'বাংলাদেশ ফেডারেশন অব হিমোফেলিয়া' সংগঠন দিবসটি পালনে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকে। মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম দুরারোগ্য মরণব্যাধিগুলোর মধ্যে হিমোফিলিয়া একটি বংশাণুক্রমিক রক্তক্ষরণজনিত রোগ।

রক্তে জমাট বাঁধার উপাদান বা ফ্যাক্টর জন্মগতভাবে কম থাকার কারণে হিমোফিলিয়া রোগটি হয়ে থাকে।এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে কতজন হিমোফিলিয়া রোগী আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় ১০ হাজার হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। আর রোগটি সাধারণত পুরুষদেরই দেখা যায়। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে ফ্যাক্টর-৮-এর ঘাটতির কারণে হিমোফিলিয়া-এ এবং ফ্যাক্টর-৯ এর অভাবে হিমোফেলিয়া-বি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। হিমোফেলিয়া হলে রোগীর খুব বেশি রক্তপাত হয়। নারীদের পিরিয়ডের  সময় অনেক দিন ধরে রক্ত ঝরা, সময়ে সময়ে নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া, দাঁতের অপারেশনের পর প্রচুর রক্তপাত হওয়া এবং প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া এসবই হিমোফিলিয়া রোগের কারণ।

সাধারণত দুই ধরনের হিমোফিলিয়া রোগী দেখা যায়, হিমোফেলিয়া-এ এবং হিমোফেলিয়া-বি। চিকিৎসকদের মতে, ৮৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-এ এবং ১৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-বি হয়ে থাকে। হিমোফেলিয়ার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমেরিকায় প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে গড়ে একজন হিমোফেলিয়া-এ আক্রান্ত।

বাংলাদেশে এ রোগের কোনো গবেষণা ও সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও চিকিৎসকদের ধারণা, দেশে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। নোভার্টিজ ফাউন্ডেশনের কনসালট্যান্ট ড. জেফরি কোহেন এর আর্টিকেলে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী প্রায় চার লাখ মানুষ হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত।

হিমোফেলিয়া রোগ এখনবধি অনিরাময়যোগ্য একটি রোগ। তবে আক্রান্তের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে সচেতনতার সঙ্গে চলাফেরা করা, যেন কোনোরূপ আঘাতে রক্তক্ষরণ না ঘটে। এ রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধে প্রধানত ব্যবস্থা হচ্ছে রক্তসঞ্চালন রক্ত থেকে তৈরি 'ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা' নামক উপাদানই কেবল এ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম। 

তবে ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা তৈরিতে অনেক রক্ত ও বেশ সময় লাগে। প্লাজমা দেয়ার থেকে ফ্যাক্টর দেয়ার রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এতে রোগীরা প্লাজমা বাহিত অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকবে।

এম এ ওয়াব বলেন, হিমোফিলিয়া রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। এসব রোগীকে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসার দেয়ার কাজ করে যাচ্ছে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়া।তিনি ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগের পাশে থাকার জন্য সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, অসহায় মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি ধনীদের এগিয়ে আসতে হবে। কারণ সঠিক চিকিৎসা পেলে হিমোফিলিয়া রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

রেহান রেজা বলেন, সঠিক সময় সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারলে হিমোফিলিয়া সুস্থ করে তোলার সম্ভব। হিমোফিলিয়া রোগীদের সহায়তার জন্য একটি কল্যাণ তহবিল করার আহবান জানান। প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। এ সময় রক্ত রোগের চিকিৎসা জন্য তারা ওয়ান স্টপ সার্ভিস অর্থাৎ এক হাসপাতালে সব সেবা চালু করার জন্য সরকার ও ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশনের প্রতি জোর দাবি জানান।