বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১  

টিকা কেনার টাকা বরাদ্দ

নিউজ ডেস্ক:

কুষ্টিয়ার বার্তা

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০২১ বুধবার

করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আমদানি ও এ সংক্রান্ত সরঞ্জাম কিনতে আরও ৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা আমদানিতে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে এ খাতে সরকারের বরাদ্দ বেড়ে ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা হচ্ছে। এর আগে গত এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় সরকার।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে জরুরি ভিত্তিতে ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপার্ডনেস’ প্রকল্পটি সংশোধন করে টিকা কেনার জন্য এই অর্থায়ন অনুমোদন  দেওয়া হয়। এদিকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা ব্যবহারে আরেক ধাপ এগুলো বাংলাদেশ। ভ্যাকসিন প্রয়োগের বিষয়টি তদারক করতে পৃথক টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়ে ১৩৭ পৃষ্ঠার নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া টিকা প্রয়োগের আগে দেশে কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। এর আগে সোমবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। এই অনুমোদনের ফলে সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনা ভ্যাকসিনের টিকা দেশে আনতে কোনো বাধা থাকছে না।

টিকা নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, ভারত থেকে সব দেশেই ভ্যাকসিন রফতানির অনুমোদন আছে। মঙ্গলবার টুইট করে এ কথা জানান তিনি। টুইটে সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী লিখেছেন, যেহেতু সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তাই তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করতে চান। এক সাক্ষাৎকারে তার বক্তব্য নিয়ে দুদিন ধরে বিভ্রান্তি চলে। এতে বাংলাদেশের টিকা পাওয়া বিলম্বিত হতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়। বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সেটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার। এই টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর এই টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনও দিয়েছে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে ৫ নভেম্বর সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাঠাবে সিরাম ইনস্টিটিউট। আর ভারত থেকে টিকা এনে বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য আগস্টে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় দেশের ওষুধ খাতের শীর্ষ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সেই চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশে সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’।

ভারত রোববার সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত টিকা ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে বাংলাদেশেও তা দ্রুত পাওয়ার আশা তৈরি হয়। কিন্তু সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালার বরাত দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রফতানি শুরুর আগে আগামী দুই মাস তারা ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতেই জোর দেবে। ওই খবরে বাংলাদেশের টিকা পাওয়া বিলম্বিত হতে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হয়। এই প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান সোমবার দফায় দফায় সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।

একনেক বৈঠক শেষে হলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে ১ হাজার ১২৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। টিকা আমদানির জন্য অতিরিক্ত ৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বাড়িয়ে সংশোধন করা হলো। তিনি বলেন, এই অতিরিক্ত অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ৫০ কোটি ডলার এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ১০ কোটি ডলার দেবে। আর সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭২ কোটি টাকার যোগান দেবে। চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাওয়া যাবে। আমরা আশা করছি এবং বিশ্বাস করি, ভ্যাকসিন আমরা পাব।