বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৩ ১৪৩০  

অর্থনৈতিক করিডর উন্নয়নে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৫০ কোটি ডলার

নিউজ ডেস্ক

কুষ্টিয়ার বার্তা

প্রকাশিত : ০৭:১৪ পিএম, ২৫ জুন ২০২০ বৃহস্পতিবার

দেশের পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও ডিজিটাল সংযোগ উন্নয়নে ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। ‘ওয়েস্টার্ন ইকোনমিক করিডর অ্যান্ড রিজিওনাল এনহ্যান্সমেন্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ২ কোটি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করছে বিশ্বব্যাংক। 

গতকাল বুধবার ৫০ কোটি ডলারের এই ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক বোর্ড। সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলটি অনেকগুলো কৃষি ও প্রাকৃতিক পণ্যসমৃদ্ধ এলাকা। এ ছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকল্পটি এই অঞ্চলের জেলাগুলোর অর্থনীতিতে উদ্দীপনা ও খামারগুলোকে বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত মহাসড়কের মাধ্যমে পশ্চিম অঞ্চলের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করবে। এভাবে করিডর বরাবর বাণিজ্য, ট্রানজিট ও পণ্য সরবরাহ বাড়িয়ে এই অঞ্চলের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক দেশের পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক ও ডিজিটাল সংযোগ উন্নত করতে বাংলাদেশকে সহায়তার অংশ হিসেবে এই ৫০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে। প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমাঞ্চলের চারটি জেলাজুড়ে যশোর-ঝিনাইদহ করিডর ধরে বাংলাদেশকে সড়ক যোগাযোগ উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্পের আওতায় এখনকার ১১০ কিলোমিটার দুই-লেন মহাসড়ক-ভোমরা-সাতক্ষীরা-নাভারণ ও যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা হবে। এতে নিরাপদে সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চলে বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীল চার লেন মহাসড়কটি সরকারের ২৬০ কিলোমিটার অর্থনৈতিক করিডর উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখবে। এর ফলে পশ্চিমাঞ্চলের ২ কোটি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, কর্মসূচির প্রথম ধাপে যশোর ও ঝিনাইদহ মহাসড়কের ৪৮ কিলোমিটার উন্নয়ন করা হবে। এ ছাড়া ৬০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সংযোগ সড়ক উন্নয়ন এবং ৩২টি শহরের বাজার বা গ্রোথ সেন্টার উন্নয়ন করা হবে। এতে স্থানীয় অর্থনীতি উৎসাহিত হবে।

এদিকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের জন্য এই প্রকল্পের আওতায় হাইওয়ে ধরে ফাইবার অপটিক ক্যাবলও বসানো হবে, যার নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেট অ্যাকসেস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতার জন্য কোভিড-১৯ মহামারীর মতো সংকট কাটাতে এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে। কেননা কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের আয় কমে গেছে। ফলে দারিদ্র্য বেড়েছে। এই ধাক্কা থেকে দরিদ্র হয়ে পড়া ব্যক্তিদের আর্থিক অবস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য প্রকল্পটি শ্রমনির্ভর কাজে নিযুক্ত করে ঝুঁঁকিপূর্ণ গ্রামীণ জনগণের তাৎক্ষণিক সামাজিক সুরক্ষা এবং জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে। এই ঋণের সুদের হার ২ শতাংশ এবং চার বছরের রেয়াতকালসহ ৩৪ বছরে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও প্রকল্পের টাস্ক দলের নেতা রাজেশ রোহাতগি বলেন, এটি ভবিষ্যতে যে কোনো মহামারী বা সংকটের জন্য জরুরি প্রস্তুতি বড়ানোর জন্য দেশের দুটি মূল পরিবহন সংস্থা সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে। এমনকি কোভিডপরবর্তী সময়েও প্রকল্পটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।