বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০  

চুয়াডাঙ্গায় ১ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পাচ্ছেন আর্সেনিকমুক্ত পানি 

নিজস্ব প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার বার্তা

প্রকাশিত : ০৩:১৯ পিএম, ৭ নভেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পানি শোধনাগার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ শোধনাগার থেকে আর্সেনিকমুক্ত বিশুদ্ধ পানি পাবে এক লাখ ৭৮ হাজার পৌরবাসী। 

চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পৌর এলাকায় এক একর জমির ওপর ৯ কোটি ৮২ লাখ ৫২ হাজার ৬৩০ টাকা ব্যয়ে এ পানিশোধনাগারের নির্মাণকাজ শুরু করে। নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। শোধনাগারটির ধারণক্ষমতা ৩৫০ ঘনমিটার পানি। পাম্প চালানোর জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া গেলে এর কার্যক্রম পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হবে। ভূগর্ভ থেকে পাম্পের মাধ্যমে পানি তুলে ট্যাঙ্কে রাখা হবে। সেখানে একটা বিকিরণের সঙ্গে সঙ্গে পানি থেকে লোহার ভাগ সরে যাবে। এরপর ওই পানি চলে যাবে বালি পরিশোধন স্তরে। সেখানে পানি শোধন হয়ে আরেকটি ট্যাঙ্কে জমা হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্লোরোফর্মের মিশ্রণে ওই বিশুদ্ধ পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে পৌর এলাকার গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আয়ুব আলী বিশ্বাস জানান, পানি শোধনাগার থেকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য তৃতীয় নগর উন্নয়ন পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতীকরণ (সেক্টর) প্রকল্পের আওতায় পৌর এলাকায় দুই কোটি ৭০ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪২ টাকা ব্যয়ে আট হাজার ৪৫০ মিটার পাইপলাইন স্থাপন, দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা ব্যয়ে ৬৮০ ঘনমিটার পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ওভারহেড ট্যাঙ্ক নির্মাণ ও চার কোটি ২২ লাখ ৪১ হাজার ৪৬২ টাকা ব্যয়ে ছয় হাজার ৪০০টি পানির মিটার স্থাপন করার কাজ চলছে, যা কিছু দিনের মধ্যে শেষ হবে।

চুয়াডাঙ্গা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ময়নুদ্দিন জানান, পৌরসভার পানি শোধনাগারটিতে ১১ হাজার ভোল্টেজের সংযোগ দিতে হবে। কুষ্টিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের দফতর থেকে নির্দেশনা এলে সংযোগ দেওয়া হবে। দ্রুত এ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জানান, চুয়াডাঙ্গা আর্সেনিকপ্রবণ এলাকা। এ জেলার পানিতে আর্সেনিকের পাশাপাশি প্রচণ্ড আয়রন থাকায় জনসাধারণের খুবই সমস্যা হচ্ছে। পানিশোধনাগারটি চালু হলে পৌরবাসী নির্বিঘ্নে বিশুদ্ধ পানি পাবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ হাসপাতাল পাড়ার ডিজিটাল মোড়ের রুহুল আমীন জানান, পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কথা জেনে ভালো লাগল। কারণ দীর্ঘদিন মাত্রাতিরিক্ত আয়রন ও আর্সেনিকযুক্ত পানি খেয়ে অনেকেই জটিল রোগে ভুগছে। পানিবাহিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য অনেক পরিবার চুয়াডাঙ্গা শহরের বেসরকারি পর্যায়ে উৎপন্ন পানি পান করেন।

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড শান্তিপাড়ার বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম জানান, পৌরসভা বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করলে পৌরবাসী পানিবাহিত রোগ থেকে পরিত্রাণ পাবে। অপরদিকে বাড়িতে ব্যবহার করা পানির ফিটিংসগুলো আয়রনযুক্ত হবে। এতে ফিটিংসও দীর্ঘস্থায়ী হবে।