বুধবার   ২২ মার্চ ২০২৩   চৈত্র ৭ ১৪২৯   ২৯ শা'বান ১৪৪৪

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
সর্বশেষ:
ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত হলো চুয়াডাঙ্গা জেলা সেবা দ্রুত বাড়াতে ৯৯৯-এ যুক্ত হচ্ছে কলার লোকেশন ট্র্যাকার সব মসজিদে একই পদ্ধতিতে তারাবি পড়ার আহ্বান
৩৮৬

মেহেরপুরের পাতাকপি যাচ্ছে বিশ্ববাজারে

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩  

কৃষিনির্ভর মেহেরপুর জেলার সবজির সুনাম দেশব্যাপী ছড়িয়েছে। এবার দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশ থেকেও আসছে সুনাম। এখন মেহেরপুরের পাতাকপি রফতানি হচ্ছে বিশ্ববাজারে।দেশের চাহিদার ১৫ শতাংশ মেটায় মেহেরপুরের সবজি।

এক সময় সবজি চাষীরা ভরা মৌসুমে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ হতেন। কখনও-কখনও চাষের খরচও তুলতে পারতেন না তারা। কষ্টের সবজি গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে বিক্রি করতো হতো।

জানা গেছে, প্রতিটি পাতাকপি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান কিনছে ১৪ থেকে ১৬ টাকায়। বিভিন্ন দেশের বাজারে প্রতিটি কপি বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশি টাকায় ৬০ থেকে ১০০ টাকায়। মেহেরপুরে উৎপাদিত সবজির মধ্যে এখন পাতাকপি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুরে রফতানি হচ্ছে।  

মেহেরপুরের সবজি দেশের বাইরে চাহিদা থাকায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছে। কৃষকরা রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাতাকপি সরবরাহ করছেন বেশি দাম। মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামে কীটনাশক মুক্ত পাতাকপি রপ্তানি পণ্যের তালিকায় যুক্ত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন সম্ভাবনাময় খাতও তৈরি হয়েছে। অল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি যোগ্য পাতাকপি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। 

কৃষি বিভাগ চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা করায় পাতাকপির উৎপাদন বৃদ্ধি, গুনগতমান বজায় রাখার পাশাপাশি খরচও কমছে। কৃষি বিভাগের হিসেবে দেশের গন্ডি পেরিয়ে চলতি বছরে মেহেরপুর থেকে বিষ মুক্ত ১৫শ’ টন পাতাকপি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানে রপ্তানি হচ্ছে। 

রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান এগ্রো ফ্রেশ কোম্পানির মাধ্যমে এসব পাতাকপি রপ্তানি হচ্ছে। মাঠ থেকেই পাতাকপি কিনে নিচ্ছেন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। আগামী বছরে আরো বেশি কৃষককে এ সুবিধার আওতায় আনতে কৃষি বিভাগকে আরো বেশি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে কৃষকরা।

মেহেরপুরের সাহারবাটি, বন্দর, মোনাখালি, সোনাপুর, কাথুলিসহ বিভিন্ন গ্রামে এই কপির আবাদ হচ্ছে। আর্থিক লাভের কথা চিন্তা করে সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। প্রতিদিন মেহেরপুর থেকে লরি ভরে নেয়া হচ্ছে চিটাগাংয়ের উদ্দেশ্যে। যা চিটাগাং থেকে সুমদ্র পথে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হচ্ছে। দেশের বাজারে এক ট্রাক পাতাকপি চাষী পেত ৪০-৪৫ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমানে দেশের বাইরে বিক্রি করে চাষী পাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলাতে ১২শ’ হেক্টর জমিতে পাতাকপি চাষ করেছেন কৃষকরা। সাধারণত শীতের মধ্যেই পাতাকপি চাষ ও হারভেস্টিং শেষ হয়ে যায়। চলতি মৌসুমে চারটি দেশ ১ হাজার ৫’শ টন বাঁধাকপির নেয়ার চাহিদা দিয়েছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। সে মোতাবেক সরবরাহ করা হবে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ায়। এখন কৃষকদের কাছ থেকে কপিগুলো সংগ্রহ করছেন রপ্তানীকারকরা।  

রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোল শাখা থেকে জানা গেছে, চারা রোপণের পর থেকে কপি সংগ্রহ করা পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে রফতানি উপযোগী করে তোলা হয়।  

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, আমাদের নিরাপদ সবজির বাজার তৈরি করতে পারলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এবছর মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও  তাইওয়ানে নিরাপদ সবজি হিসেবে বাঁধাকপি বাংলাদেশ থেকে রফতানি হচ্ছে। অন্যান্য দেশেও বাড়ছে নিরাপদ এই সবজির চাহিদা। কোনভাবেই যেনো এ সুযোগ হাতছাড়া না হয় সে বিষয়ে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

 কুষ্টিয়ার  বার্তা
 কুষ্টিয়ার  বার্তা
এই বিভাগের আরো খবর